পরকীয়া প্রেমিকের হারানো ফোনে স্বামী হত্যার রহস্য উদঘাটন।
জাহিদুল ইসলাম মেহেদী, বরগুনা
বরগুনায় এক শিক্ষককে হত্যা করে হৃদরোগে মারা গেছেন বলে চালিয়ে দিয়েছেন স্ত্রী। তবে দুর্বার টুয়েন্টিফোরের অনুসন্ধানে বেড়িয়ে এলো হত্যারহস্য। হাসতে হাসতে স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করে নির্মমভাবে ওই শিক্ষককে হত্যা করেছে স্ত্রী ও তার প্রেমিক। হত্যার পরে স্বামী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে তাড়িঘরি করে মৃতদেহ দাফন করে দিয়ে হত্যার মিশন সফল করে সবাইকে বোকা বানায় তারা।
এ ঘটনায় হয়নি কোনো মামলাও। অনুসন্ধানে জানা যায়, গত বছরের মে মাস থেকে বরগুনা সদর উপজেলার গোলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক নাসির হাওলাদারকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। ২৩ মে রাতে স্বামীকে খাবারের সাথে রাত ৮টায় ঘুমের ঔষুধ মিশিয়ে অজ্ঞান করে স্ত্রী মিতু।
রাত ১১টার পরে রাজুকে ফোন করে বাসায় আসতে বলে মিতু। রাত ১১টা ৪০ এর পরে ওই শিক্ষকের বাসায় এসে হাত-পা বেঁধে পায়ের উপরে উঠে বসে রাজু। স্ত্রী মিতু স্বামীর বুকের উপরে উঠে কম্বল দিয়ে শ্বাষরোধ করে হত্যার চেষ্টা করলে প্রাণ ভিক্ষা চান ওই শিক্ষক। টানা দু'ঘন্টা দন্তাদস্তির এক পর্যায়ে নিস্তেজ হয়ে যায় নাসিরের দেহ। সাকসেস হয় কিলিং মিশন। পরদিন সকালে তরিগড়ি করে তাকে দাফন করা হয়।
এর আগেও বেশ কয়েকবার ওই স্কুল শিক্ষককে হত্যার চেষ্টা করে তার স্ত্রী মিতু আক্তার। এলাকাবাসীরা জানায়, ওদিন ছিল শেষ রমজান। সেহরীর কিছুক্ষন আগে নাসির স্যারের বাড়িতে কান্নাকাটির আওয়াজ পেয়ে আমরা সেখানে ছুটে যাই। গিয়ে দেখি ঘরের দরজা খোলা এবং মিতু ও তার মেয়ে নুসরাত কান্নাকাটি করছে।
এসময় নাসির স্যারের মুখে রক্ত দেখেছি আমরা। স্কুল শিক্ষক নাসিরের বড়ভাই আবদুল জলিল জানান, আমার ভাই অত্যান্ত নরম মানুষ ছিল। এলাকার সবার সাথে তার ভালো সম্পর্ক ছিল। তার স্ত্রী মিতু ছিল মাদকাসক্ত। আমাদের কাউকে সে সহ্য করতে পারত না।
যারা আমার ভাইকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে তাদের বিচার চাই আমরা। হাসতে হাসতে হত্যার এ পরিকল্পনা করেছিলো নিহত শিক্ষকের স্ত্রী মিতু ও তার পরকীয়া প্রেমিক একই এলাকার বারেকের ছেলে রাজু মিয়া। হত্যাকারী রাজুকে খুঁজে বের করে তার সাথে কথা বলতে চাইলেও কথা বলতে রাজী হয়নি রাজু।